প্রকৃতি

 

মাতৃরস

- সাগর আল হেলাল


বৃষ্টি হচ্ছিলো। ঘর থেকে বের হতে পারছিলাম না। কেমন ম্যাজ ম্যাজ করছিলো ভেতরটা। কম্পিউটারেও ভালো লাগছিলো। কুষ্টিয়ার লালন মাজারে প্রোগ্রাম চলছে। যাওয়ার ইচ্ছে ছিলো। আবহাওয়া বিদ্রুপ করায় যাওয়া হলো না। হঠাৎ বৃষ্টি সামান্য থেমে যাওয়ায়, বারান্দায় দাঁড়ালাম। চোখ পড়লো খেজুর গাছের দিকে। ফুল এসেছে খেজুর গাছে। এখন খেজুর গাছে রস দিচ্ছে। এইতো সেদিন, এক লিটার খেজুরের রস একাই সাবড়ে দিলাম। এখন মনের মধ্যে খারাপ লাগছে। খেজুরের রস কী তাহলে তার ফলের খাবারের জন্য আসে গাছের শরীরে ! 

মায়েদের শরীরে এভাবেই রস আসে। সন্তানের জন্য। খেজুরের ফলতো খেজুরের সন্তান বৈ অন্য কিছু নয়। তাহলে কি আমরা খেজুর ফলের আহার খেয়ে থাকি ? আমি না খেলে কি সে রস খেজুরের শরীরে লাগতো ? খেজুর ফলে অনেক প্রোটিন ও ভিটামিন আছে। আমরা রস খেয়ে ফেললে কি খেজুর ফলের  প্রোটিনের পরিমাণ কমে যায় ? নাকি খেজুরের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হয় না ?

জীবনটা চলছে এভাবেই। একজনের খাবার অন্যে খেয়ে যাচ্ছে। যারটা খাচ্ছে, তার কি হবে সে দিকে কারোরই খেয়াল নেই। ছোটোরা বড়োকে খেয়ে ফেলে। শক্তিধর লোক দুর্বলকে খেয়ে নেয়। প্রকৃতিকে জয় করা মানুষ প্রকৃতি  থেকে যা সংগ্রহ করে নিচ্ছে, তা কি তার নিজের ক্ষতিই করছে না !

খেজুরের রস না খেয়ে আমরা খেজুর খেলে কি সেই শক্তি পেতে পারি না ?  আমরা আমাদের দেশীয় খেজুর না খেয়ে আরবী খেজুর অনেক টাকা দিয়ে কিনে খাই। দেশীয় খেজুর কিছু খায় পাখি, কিছু খায় ছোটো ছোটো বাচ্চারা শখ করে। বাকিটা ঝরে যায় অনাদরে। খেজুরের গাছ থেকে রস কেড়ে না নিলে কি আমাদের দেশীয় খেজুর আরও বড়ো আকারের হবে ? হবে না, তাই বা কি করে বলি ?

কৃষিবিদ্ এ বিষয়ে ভেবে দেখতে পারেন।

-

১০.০২.২০২২

1 Comments

Post a Comment

Previous Post Next Post